কর্মীর হাত আল্লাহর পছন্দ

কর্মোক্ষম মানুষের জন্য কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করাকে আল্লাহ পছন্দ করেন। নিষ্কর্মার হাত থেকে কর্মীর হাত আল্লাহর কাছে বেশি পছন্দনীয়। ইসলাম সবসময় কর্মের ব্যাপারে উৎসাহিত করে। কোনো নবী-রাসুল পরনির্ভরশীল ছিলেন না। সবাই পরিশ্রম করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন। অঢেল সম্পদ ও সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও অনেকেই নিজের কাজ নিজে করেছেন। হাদিসে আছে, এমন কোনো নবী-রাসুল ছিলেন না, যিনি ছাগল চরাননি। কর্মোক্ষম ব্যক্তির নিষ্কর্মা হয়ে বসে থাকাকে ইসলাম সমর্থন করে না। কোনো মুসলমান কাজ করার শক্তি আছে এবং বাজারে তার শ্রমের মূল্য আছে, এমতাবস্থায় ইবাদত-বন্দেগিতে নিমগ্ন হওয়ার বা আল্লাহর ওপর নির্ভরতার নাম করে রিজিক উপার্জন থেকে বিরত বা বেপরোয়া হয়ে থাকাটাও ইসলাম ভালো চোখে দেখে না।
তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর ওপর নির্ভরতার তাগিদ ইসলামে রয়েছে। কিন্তু তাওয়াক্কুল মানে এই নয় যে, কাজ না করে হাতের ওপর হাত রেখে আল্লাহর সাহায্যের দিকে তাকিয়ে থাকা। তেমনি কাজ করার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও লোকজনের দান-খয়রাতের ওপর নির্ভরশীল হয়ে বসে থাকাও নিন্দনীয় কাজ। রাষ্ট্রের কর্মোক্ষম প্রতিটি নাগরিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা সরকারের দায়িত্ব। রাষ্ট্রের অবকাঠামোগত সমস্যা ও সামর্থ্যরে টানাপড়েনের কারণে অনেক সময় ইচ্ছা থাকলেও সরকারের পক্ষে তা করা সম্ভব হয় না।
এ জন্য ইসলামের নীতি হলো, নিজেকেই কাজ খোঁজে নিতে হবে। সরকার কাজের ব্যবস্থা করে দিলে ভালো, অন্যথায় ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই। আল্লাহর দেয়া শক্তি ও সামর্থ্য ব্যয় করে নিজেকেই শ্রমের বিনিময়ে জীবিকা নির্বাহ করতে হবে। নিজ হাতে উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করা সংসার ও সমাজের কাছে যেমন প্রশংসনীয়, তেমনি আল্লাহর কাছেও প্রিয়। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘নিজ হাতে উপার্জনকারী ব্যক্তি আল্লাহর প্রিয় বান্দা।’ জনৈক সাহাবি রাসুল (সা.)-এর কাছে ভিক্ষা চাইতে এলে রাসুল (সা.) তাকে ভিক্ষা না দিয়ে আত্মকর্মসংস্থানের উপায় করে দিয়েছিলেন। ওই সাহাবি বনে গিয়ে কাঠ কেটে এনে বাজারে বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়েছিলেন। সাহাবায়ে কেরাম (রা.) সবাই ছিলেন আত্মনির্ভরশীল। সবাই নিজ হাতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন। সাহাবায়ে কেরামের জীবন ও আদর্শ থেকেও আমরা আত্মোন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির জন্য কাজ করার প্রেরণা অনুভব করতে পারি।
Share on Google Plus

About Unknown

0 মন্তব্য(গুলি):

Post a Comment

SD ONLINE NEWS