ইসলাম নামাজকে ইসলামের একটি মৌলিক ভিত্তি
বলে অভিহিত করা হয়েছে। মানুষের মাঝে পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে নামাজের
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। নামাজ হলো আল্লাহতায়ালার পথে চলার পরিপূর্ণতম
একটি মাধ্যম। নামাজ মানুষকে যাবতীয় অন্ধকার থেকে রক্ষা করে সামগ্রিক
কল্যাণের দিকে ধাবিত করে।
নামাজে রয়েছে প্রশান্তি ও মুক্তি। একবার হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.] মসজিদে
নববিতে বেশ প্রফুল্লচিত্তে উপস্থিত হলেন। কিছুক্ষণ পর মুসল্লিদের সমাবেশে
তিনি নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব সম্পর্কে আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে পাওয়া
সুসংবাদ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, তোমরা কি জান আল্লাহতায়ালা নামাজিদের জন্য
কি সুসংবাদ দিয়েছেন? উপস্থিত সাহাবিরা বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই [সা.]
ভালো জানেন, আমরা শোনার জন্য প্রস্তুত। তখন হজরত রাসুলুল্লাহ [সা.]
আল্লাহতায়ালার উদ্ধৃতি দিয়ে বললেন, যে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সময়মতো আদায় করবে
এবং নামাজের যত্ন নেবে বা নামাজকে কম গুরুত্ব দেবে না ও এই অবস্থায় আমার
অর্থাৎ আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, আমি তাকে বেহেশতে প্রবেশের ওয়াদা
দিচ্ছি। আর যে নামাজ আদায় করবে না, তার সম্পর্কে আমার এ ধরনের কোনো ওয়াদা
নেই। আমি চাইলে তাকে শাস্তি দেব অথবা ক্ষমা করব। এ হাদিস থেকে বোঝা যায়,
আল্লাহতায়ালা নামাজিকে কত বেশি ভালোবাসেন।
নামাজ ইসলামের ফরজ ইবাদতের মধ্যে অন্যতম এক ইবাদত। নামাজের পুরস্কারও
অনেক বড়। আল্লাহতায়ালার সঙ্গে সংযোগের সুনিশ্চিত পথ এবং আত্মাকে উন্নত করার
মাধ্যম এই নামাজ। এই উন্নত ইবাদতের ইতিবাচক শিক্ষা নামাজির মন-মানসিকতায়
বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনে এবং সবচেয়ে উন্নত গুণাবলির সমাবেশ ঘটে তার মধ্যে।
ইসলাম ধর্মে নামাজের ওপর ব্যাপক গুরুত্ব দেয়ার অন্যতম কারণ এটাই। পবিত্র
কোরআনে কারিমের সুরা আহকাফের ১৯ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, প্রত্যেকের
স্থান তার কর্ম অনুযায়ী, এটা এ জন্য যে আল্লাহ প্রত্যেকের কাজের পূর্ণ
প্রতিফল দেবেন এবং তাদের প্রতি অত্যাচার করা হবে না। একজন নিষ্ঠাবান নামাজি
সুখে ও দুঃখে সর্বাবস্থায় আল্লাহর প্রেমে মত্ত থাকেন এবং তাঁরই সাহায্য
কামনা করেন। আল্লাহতায়ালাও তাঁর বিনম্র ও ভীত-বিহ্বল বান্দাদের জন্য নিজ
রহমতের অসীম দিগন্ত খুলে রাখেন। আর এটা প্রকাশ পায় দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত
নামাজের মাধ্যমে।