জান্নাতের জন্য দু‘আর গুরুত্ব:
আবূ হুরাইরাহ (রাধিঃ) বর্ণনা করেন যে,
রাসুল (সাঃ) বলেন, যখন কোন ব্যক্তি জাহান্নাম হতে ৭ বার (আল্লাহর নিকট)
আশ্রয় চায় তখন জাহান্নাম আল্লাহকে বেলে, “ও আমার প্রভু! তোমার অমুক বান্দা
আমার কাছে আশ্রয় চায় । সুতরাং তাকে আশ্রয় দিন ।” যথন কোন ব্যাক্তি ৭ বার
(আল্লাহর নিকট) জান্নাত প্রার্থনা করে তখন জান্নাত আল্লাহকে বলেন, “ও আমার
প্রভু! তোমার অমুক অমুক বান্দা আমাকে চায় । সুতরাং তাকে জান্নাতে প্রবেশ
করতে দিন ।”
![]() |
আল কোরানুল কারিম |
আবূ সালিহ জাকওয়ান একজন সাহাবী (রাধিঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, রাসুল (সাঃ)
এক ব্যক্তিকে প্রশ্ন করেন, “ ‘সালাতের মধ্যে তুমি কিভাবে দু‘আ করো’? সে
বলল, আমি তাশাহুদ পড়ি এবং বলি, হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে জান্নাতে চাই এবং
জাহান্নাম হতে তোমার আশ্রয় চাই’ ।”
আমাদের এ ছোট দু‘য়াটি মুখস্থ করা উচিৎ
এবং জান্নাত চাওয়ার জন্য ব্যবহার করা উচিৎ । আর দু“য়ার দ্বারা আরো করুণা
এবং সওয়াব লাভ করা যাবে কেননা, এটি একজন সাহাবী হতে বর্ণনা করা হয়েছে- যিনি
রাসুল (সাঃ)-এর সামনে দু‘য়াটি পড়েছিলেন ।
জান্নাতের জন্য আমল বা সৎকাজের গুরুত্ব:
আমাদের মধ্য হতে কারো কাছে এ নিশ্চয়তা নেই যে, তিনি জান্নাত পাবেন । সহীহ বুখারী ও মুসলিমের একটি হাদীসে আছে যে, এক ব্যক্তি জান্নাতের আমল করতে করতে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, জান্নাত তার থেকে এক হাত দূরে থাকবে । তারপর তার জন্য যা লিখিত আছে তা তাকে পেয়ে যাবে এবং জান্নাতের আমল করতে করতে সে জান্নাতে পৌঁছে যাবে ।
এটি সত্য যে, যে ব্যক্তি জ্ঞানসহ
আন্তরিকতার সাথে কালেমা পড়বে তার জন্য আল্লাহ জান্নাতে প্রবেশ নিশ্চয়তা
দিয়েছেন । কিন্তু কোন মু‘মিনের জন্য এ নিশ্চয়তা নেই যে, সে পৃথিবীর ঈমান
অবস্থায় বেঁচে থাকবে । সুতরাং সকল ঈমানদারদের জন্য এটি আবশ্যক যে, সে
বিরতিহীনভাবে আল্লাহর সন্তোষের জন্য কাজ করতে থাকবে যাবে সে ঈমানের সাথে
মৃত্যুবরণ করতে পারে ।
আল্লাহ বলেন: “এবং এর জন্য যে প্রতিযোগিতা করতে চায় তার প্রতিযোগিতা করা উচিত”
আল্লাহ আরো বলেন: “তোমরা প্রতিযোগিতার মনোভাব নিয়ে ধাবমান হও তোমাদের
প্রতিপালকের কাছ থেকে ক্ষমা এবং ঐ জান্নাতের দিকে যার প্রশস্ততা আসমান ও
জমিনের ন্যায় যা প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে মুত্তাকীদের জন্য ।”
ইবনু আবিদ দুনইয়া (রহঃ) সুলাইমান
আদ-দারানী (রাধিঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, ইরাকে বসবাসকারী এক যুবক ছিল; যিনি
প্রচুর পরিমানে ইবাদত করতো । সে তার বন্ধুদের সাথে একটি ভ্রমনে মক্কা শহরে
গেল । সে সালাত আদায় করত যখন তার বন্ধুরা বিশ্রাম নিত । যখন তার বন্ধুরা
খাবার খেত তখন সে সওম পালন করত । ভ্রমন শেষ করা পর্যন্ত তারা একত্রে ছিল ।
তার বন্ধুরা পৃথক হবার পূর্বে তাকে প্রশ্ন করল, হে আমার বন্ধু! তুমি কেন
এগুলা করছ? সে বলল, আমি জান্নাতের একটি প্রাসাদ (স্বপ্নে) দেখেছি । যেখানে
বিল্ডিং শেষ হয়েছে, সেখানে (একস্থানে) একটি স্বর্ণের এবং একটি রৌপ্যের ইট
আছে । সেখানে পদ্মরাগ মণি বা ইয়াকুত পাথর দিয়ে তৈরি একটি ব্যালকনি এবং
পান্না দিয়ে তৈরি একটি ব্যলকনি আছে এ দুই ব্যালকনির মাঝে একজন হুর চুল ছেড়ে
দিয়ে দাড়িয়েছিল । সে (হুর) পিতল (রংয়ের) পোশাক পরিধান করা ছিল । তার
নড়াচড়ার সাথে সাথে তার পোশাকও নড়তে ছিল । সে (হুর) বলল, আমার কাছে পৌছতে
হলে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ কর । আল্লাহর রহমতে আমি তার কাছে পৌছতে
আল্লাহর জন্য কাজ করছি এবং এ কারণেই তুমি আমাকে সালাত আদায় করতে ও সওম
(রোযা) রাখতে দেখছো ।