দার্জিলিংকে হার মানাবে রাঙ্গামাটির সাজেক ভ্যালী (ছবিসহ)

আকাশের মেঘগুলো যেন উড়ে উড়ে এসে বসেছে পাহাড়ের এক একটা কোলে। আর সকাল-সন্ধ্যা প্রায় সময়ই মেঘের খেলা যা সাজেকের সবচেয়ে অন্যতম আকর্ষণ। আপনার চোখ যেদিকে যাবে, দেখবেন শুধুই মেঘ আর রংয়ের খেলা। আর আপনি যদি সর্বোচ্চ চূড়া থেকে নিচে দূরের গ্রামগুলোর দিকে তাকান তাহলে মনে হবে পটে আঁকা যেন এক আধুনিক কোনো ছোট্ট শহর!
.
বদলে যাওয়া সাজেকের মানুষের মাঝেও এসেছে এক অনন্য পরিবর্তন। এই বদলে যাওয়াকে অনেক স্থানীয় লুসাই ও ত্রিপুরাদের ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও কারও কারও আছে ভিন্ন ভিন্ন মত। সবচেয়ে যা দেখবেন রাতের সাজেক যা আপনাকে অনেক সুন্দর একটা দৃশ্য দিবে। বিদ্যুৎ নেই তবুও সোলারের মাধ্যমে এখানে চলে সবকিছু।
.
সকালে ঘুম থেকে উঠে চোখ খুললেই মনে হবে, মেঘের চাদরে ঢাকা রয়েছে এই সাজেক। এই মধুর পাহাড়ের উঁচু থেকে মেঘে মেঘে লাফ দিতে ইচ্ছা করতে পারে যে কারোর! প্রাকৃতিক নিসর্গ সাজেক পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে। পর্যটনবান্ধব সাজেক প্রতিষ্ঠায় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে গত কয়েক বছরের প্রচেষ্টার ফসল আজকের সাজেক।
.
এই সাজেকে একসময় যেখানে বিশ্রামের ব্যবস্থা ছিল না, ছিল পানির কষ্ট। এখন সবকিছুই হাতের নাগালে। আর পর্যটকদের ভিড়ও রয়েছে চোখে পরার মতো। সাজেকের মূল কেন্দ্র রুইলুইতে পানির সংকট দূর করতে নির্মিত হয়েছে জলাধার। পাশেই গণশৌচাগার। চালু করা হয়েছে ‘পাহাড়ি রেস্তোরাঁ’।

মনোমুঙ্কর অত্যাধুনিক দুটি রিসোর্ট নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এই দুটিতেই রয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের বিশেষ সুবিধা। এছাড়াও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) আলোর উদ্যোগে ‘আলো রিসোর্ট’ ইতোমধ্যে চালু।
.
ইতিমধ্যে আবার অনেক ভ্রমণ পিপাসু মানুষ বলছেন ‘বাংলাদেশের সাজেক নাকি ভারতের দার্জিলিং’। খাগড়াছড়ি জেলা শহর থেকে দীঘিনালা হয়ে যেতে হয় সাজেকে। পার্বত্য জেলা রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার হচ্ছে এই সাজেক ইউনিয়ন যাকে দেশের বৃহত্তম ইউনিয়নও বলা হয়ে থাকে। এটি দীর্ঘ ৬৭ কিলোমিটার পাহাড়ি সড়কে যেতে যেতে লাগবে এক অন্যরকম আনন্দ। মুক্ত বাতাস আর প্রকৃতির নিদর্শন আর আঁকাবাঁকা মসৃণ সড়কের দুই ধারে তাকাতেই যেন এমন ভরে যায় সব মানুষের। আর ঐতিহ্যবাহী চাঁদের গাড়িতে ঝুলে সাজেক যেতে তো মজায় আলাদা। কাচালং নদী অতিক্রম করে দীর্ঘ ভ্রমণে মুহূর্তের জন্যও খারাপ লাগে না। ২/৩ ঘণ্টার এই ভ্রমণে সাজেক উপত্যকা উঠার আগে ঝরনায় গা ভিজিয়ে নেওয়া যায়। এক সময়ের কমলার জন্য বিখ্যাত সাজেকে এখনো মিষ্টি কমলা পাওয়া।
কিভাবে যাবেন:
চট্টগ্রাম থেকে শান্তি পরিবহনে দীঘিনালা। সেখান থেকে মোটর সাইকেল কিংবা জীপে করে ৪৫ কিলোমিটার দূরে সাজেক। ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি পর্যন্ত শ্যামলী, শান্তি, ইউনিক, সৌদিয়া ও এসআলম পরিবহনের বাসও রয়েছে।
কোথায় থাকবেন:
সাজেকে সেনাবাহিনী ও বিজিবি পরিচালিত দুইটি রিসোর্ট রয়েছে। এছাড়া বেসরকারি সংস্থা আলো’র একটি রিসোর্ট আছে। কম টাকায় কটেজেও রাতযাপন করা যাবে।
খেয়াল রাখবেন:
সাজেকে পানির খুবই সংকট। এখানে পাহাড়িদের দেওয়া পানি নষ্ট করবেন না। তাছাড়া পানির বোতল, পলিথিন, প্লাস্টিক নির্দিষ্ট স্থানে ফেলবেন। যত্রতত্র ফেলে প্রকৃতিকে ধ্বংস করবেন না।
 
Share on Google Plus

About Unknown

0 মন্তব্য(গুলি):

Post a Comment

SD ONLINE NEWS