সিলেটের জকিগঞ্জে বিরল রোগে আক্রান্ত এক স্কুল ছাত্রের সন্ধান পাওয়া
গেছে। উপজেলার বারঠাকুরী ইউপির তিনগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ
ছাত্রের সন্ধান মিলে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে অন্য শিক্ষার্থীদের
সাথে ড্রেস পরে বসে আছে আব্দুন নূর নামের অস্বাভাবিক আকৃতির এক শিক্ষার্থী।
এই শিক্ষার্থীর শরীরের চামড়াশুষ্ক ও ঝুলে পড়ছে, মাথাটা বড়, চুল ও চোঁখের
উপরে ভ্রু নেই। মুখটাও ছোট, হাত ও আঙ্গুলের হাড়গুলো স্পষ্ট ভেসে উঠেছে,
চলাফেরায় ধীরগতি। এই শিক্ষার্থীর চেহারা দেখতে ৩০/৪০ বছরের বয়স্ক মানুষের
মত লাগে। ছেলেটি কজাপুর গ্রামের প্রবাসী আব্দুল বাসিতের পুত্র।
এ রোগ নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসক ডা. আব্দুল্লাহ আল মেহেদীর সাথে
কথা বলে জানা যায়, প্রজেরিয়া (progeria) জ্বীন ঘটিত একটি বিরল রোগ। যার ফলে
এ রোগে আক্রান্ত অল্প বয়সের শিশুগুলোকেও দেখতে বয়স্ক মনে হয়। আমাদের দেশে এ
ধরণের কোন রোগীর সন্ধান ইতিপূর্বে মেলেনি।
জকিগঞ্জেই প্রথম এই ধরণের রোগের সন্ধান পাওয়া গেছে। এটি বংশানুক্রমিক বা
উত্তরাধিকারসূত্রের কোন রোগ নয়। এ রোগ সম্পর্কে বিজ্ঞানীদেরও অনেক কিছু
অজানা। এ রোগ নিরাময়ে কোনো চিকিৎসাই সফল হয়নি। রোগটি চিহ্নিত করা গেলেও
তাঁর চিকিৎসা জানা নেই। প্রজেরিয়া রোগে আক্রান্ত শিশুরা গড়ে ১৩-১৫ বছর
বাঁচে।
তিনগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হীরেময় নাথ জানান,
বিরল রোগে আক্রান্ত এই শিক্ষার্থী লেখাপড়ায় অনেকটা মেধাবী। সে কথা বলে খুবই
আস্তে। অন্য শিক্ষার্থীরা রোগে আক্রান্ত এ ছাত্রকে ভয় পায়।
শিশুটির মা রাবিয়া বেগমের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এ রোগটি শিশুটির
জন্মের। রোগটি থেকে রেহাই পেতে অনেক চিকিৎকের দ্বারস্থ হয়েছি কিন্তু নিরাময়
হয়নি। চিকিৎকরা জানিয়েছেন এ রোগের কোন চিকিৎসা নেই। শিশুটি পুষ্টির অভাবে
এখন শুকিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম সিরাজী বলেন, আমার চাকুরী
জীবনে এ রোগে আক্রান্ত কোন শিশু দেখিনি। আমরা এই শিক্ষার্থীকে
প্রতিবন্ধিদের তালিকায় অর্ন্তভূক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।